স্টাফ রিপোর্টার : জামালপুর সদরে নিয়ম না মেনে নাম পরিবর্তন করে কাঠ পোড়াচ্ছে মেসার্স জীরন ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা। ইটভাটাটির অবস্থান সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকায়।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে ইটভাটাটির নাম ছিলো মেসার্স জীবন ব্রিকস। তখন ইটের নাম ছিলো জীবন। বর্তমানে ভাটাটির নাম রাখা হয়েছে মেসার্স জীরন ব্রিকস এবং এর ইটের নাম রাখা হয়েছে জীরন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এটি একটি রেডিমেড ইটভাটা। এই ইটভাটার প্রকৃত মালিক জামালপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগনেতা এমদাদুল হক জীবনের বাবা মো. ইউসুফ আলী। এমদাদুল হক জীবন তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠা করলেও মূলত বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ক্ষমতার দাপটে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করতেন।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই পলাতক রয়েছে এমদাদুল হক জীবন। এই সুযোগে ইট ভাটাটি দখলে নেয় স্থানীয় কয়েকজন। আর পরিবর্তন করে ভাটা ও ইটের নাম। তিন ফসলি জমিতে বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে উঠা ভাটাটিতে রয়েছে বিপুল পরিমাণ গাছের গুঁড়ি। ইটভাটার চিমনি বেশ উঁচু হলেও গাছের গুঁড়ি বা অন্যান্য কাঠ পোড়ানোর কারণে পর্যাপ্ত কালো ধোঁয়া নির্গত হতে দেখা গেছে।
মেসার্স জীরন ব্রিকসের ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম দুলাল বলেন, ভাটাটি আগে থেকেই সবাইকে ম্যানেজ করেই চলে আসছে এবং ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের এই কয়েক মাসেও এখনও পর্যন্ত কোন সমস্যা হয় নাই। ইটভাটায় পুরোদমে ইট উৎপাদনের কার্যক্রম চলমান আছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
জামালপুরের মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘এতো দিন আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ইট ভাটাটি পরিচালনা করে আসছিলো একজন কাউন্সিলর। এখনো তাই হচ্ছে। এখন যারা ইট ভাটাটি পরিচালনা করছেন তারা আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সব করছেন। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাকি ইটভাটাগুলোও এমন কাজ করবে।’
এসব বিষয়ে জামালপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুকুমার সাহা বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়া একটি ইটভাটার নাম পরিবর্তনের জন্য আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। কিন্তু মেসার্স জীরন ব্রিকস নামের ইটভাটাটি অবৈধ। তাদেরকে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। তাই তাদের নাম পরিবর্তনের জন্য কোনো কাগজ আমরা পাইনি।’
সুকুমার সাহা আরো বলেন, ‘আমাদের কার্য ক্ষমতার মধ্যে যতটুকু করার আমরা ততটুকু করেছি। আমরা গত বছর তাদেরকে জরিমানা করেছি। বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। এর বাইরে আমাদের করার কিছু নেই। এখন যা করার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ করবেন।’

