
মাদারগঞ্জ প্রতিমা বিসর্জন ২০২৫, ছবি: আকন্দ সোহাগ
মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি:
আনন্দের পর শেষ বিদায়ের বেদনা- এমন আবেগঘন দৃশ্যই দেখা গেছে জামালপুরের মাদারগঞ্জে দুর্গোৎসবের প্রতিমা বিসর্জনে।
২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার। সকাল থেকে মন্দিরে মন্দিরে ভক্তরা জড়ো হন। দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর আগে চলে সনাতনী ঐতিহ্যের সিঁদুর খেলা। লাল সিঁদুরে ভরে ওঠে ভক্তদের কপাল ও মুখমণ্ডল, একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে জানান সুখ-শান্তির শুভকামনা। কারও মুখে ছিল আনন্দের হাসি, কারও চোখে বিদায়ের জল।
দুপুরের পর থেকেই হাওয়াই রোড সংলগ্ন বাস্তবায়নাধীন স্টেডিয়াম মাঠে জমতে থাকে ভক্তদের ভিড়। প্রতিমার সামনে দাঁড়িয়ে অনেকে শেষ মুহূর্তের স্মৃতি ধরে রাখতে তুলছিলেন ফটোসেশন, কেউ আবার সেলফি তুলে রাখছিলেন দেবী মায়ের সঙ্গে বিদায়ের ছবি।
বিকেলে শুরু হয় শোভাযাত্রা। ঢাক-ঢোলের তালে তালে, শঙ্খধ্বনির গম্ভীর সুরে ভক্তরা বের করেন বর্ণিল আনন্দযাত্রা। রাস্তাজুড়ে তখন শুধুই গান, বাজনা আর ভক্তদের উচ্ছ্বাস। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে ভক্তরা কেউ হেঁটে, কেউবা ভ্যান ও রিকশায় প্রতিমা নিয়ে যাচ্ছিলেন নদীর ঘাটে। তবুও উৎসবের রঙে ভিজে থাকা মানুষগুলোকে থামাতে পারেনি এক ফোঁটা বৃষ্টি।
ঘাটে পৌঁছে ধূপ, প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বালিয়ে ভক্তরা প্রার্থনা করলেন আগামী বছরের শান্তি, সমৃদ্ধি ও সুখের জন্য। প্রতিমা বিসর্জনের মুহূর্তে শোনা গেল একসঙ্গে হাজারো কণ্ঠ- “আসছে বছর আবার হবে…”
স্থানীয় পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা জানান, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা বিসর্জনের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ভক্তদের একজন বললেন, “দেবী মায়ের বিদায় সবসময় মন খারাপ করে দেয়। তবু বিশ্বাস করি, আগামী বছর আরও আনন্দে, আরও বর্ণিলভাবে দেবী মায়ের আগমন হবে।”